সাম্প্রতিক সময়ে এনআইডির কর্তৃত্ব নির্বাচন কমিশনের হাত থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন সোসাল মিডিয়া এমনকি জাতীয় গণমাধ্যমে নানা খবর প্রকাশিত হয়। এর ধারাবাহিকতায় জনমনে এক ধরনের ধোয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সেবাপ্রার্থীরা এখন কোথায় যাবে সেটা নিয়ে অনেকেই খোজ খবর করার চেষ্টা করেন। কারণ এনআইডি রেজিস্ট্রেশন বা জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধ বা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য হালনাগাদ করণ বা হারানো এনআইডি উত্তোলন একটি জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ সেবা হওয়ায় তারা জেনে শুনে তারপর কোথায় যাবেন কোন অফিসে যাবেন সেটা অনুসন্ধান করে থাকেন। অনেকদিন ধরে এ ধরনের জল্পনা কল্পনা হওয়ায় আম-জনতা পড়েছেন এক ধরনের ফ্যাসাদে। এছাড়া সরকারী সেবা পেতে এমনিতেই জনমনে রয়েছে নানা অভিজ্ঞতা। তাই চেষ্টা করেন ভালো করে জেনে শুনে পদক্ষেপ নিতে বা কোন পরিচিত লোক খুজে বের করতে। কারণ পরিচিত লোক পাওয়া গেলে কার্যোদ্ধার অনেকটাই সহজ হয়ে যায় বলে অনেকেই মনে করেন।
এ ধরনের একটা জরুরী সেবার ক্ষেত্রে এমন ধোয়াশে অবস্থার জন্য এটা হওয়াটাও খুব অস্বাভাবিকও নয়। কারণ বলতে গেলে এনআইডি কার্ড ছাড়া পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করতে গেলেও বিপত্তি হয় কিনা সেরকম একটা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। এছাড়া অনেক বছর ধরে এটি নিয়ে টানা হেচড়া চলার পর বেশ কিছুদিন আগে জাতীয় সংসদে এনআইডির কর্তৃপক্ষ পরিবর্তনের একটা বিল পাশ হয়েছে যেটা জনগণ জেনেছে। এছাড়া আরো কিছু খবর প্রকাশের মাধ্যমে এটি এখন কে করছে তা নিয়ে বেশ ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরী হয়ে আছে। নির্বাচন কমিশনে কেউ থাকলে তাঁর কাছে অনেকেই এই প্রশ্নটা করছেন যে, এনআইডি কার্ড এখন কারা করে এটা কি এখনও নির্বাচন কমিশন করছে নাকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চলে গেছে? আবার কারো যদি পুলিশ বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরিচিত কেউ থাকে তাহলে তাকেও এই প্রশ্ন করছেন যে, এটা কি এখনও নির্বাচন কমিশন করছে নাকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় করছে?
যাহোক অনেকেই এতক্ষণে ধৈয্য হারিয়ে ফেলছেন এবং বলছেন আরে ভাই এতকথা না বলে আসল প্রশ্নটার উত্তর দিচ্ছেন না কেন? আসলেই তাই অ-ধৈর্য্যতো হওয়ারই কথা। তাহলে আসা যাক আসল কথায়। এনআইডি নিয়ে নতুন আইন পাশ হলেও এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র এখনও নির্বাচন কমিশন হতেই দেয়া হচ্ছে। নতুন আইনে এই বৈধতা এখনও আছে। আর নতুন কর্তৃপক্ষ আপাতত জনবল এর বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করলেও পুরো অপারেশনটা একটা বড় ব্যাপার তাই এখনও এটা পুরোপরি ছাড়িয়ে নিয়ে বেশ সময়ও লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ এমন স্পর্শকাতর এবং জন গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল বিষয় সবদিক বিবেচনা না করে হুট করে নিয়ে নিলেইতো হবেনা। অনেক বিষয় দেখে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তবেইনা হস্তগত করতে হবে নয়তো অনাকাঙ্খিত জটিলতা তৈরী হয়ে এর সাথে সম্পর্কিত অনেক বিষয়ে বিপত্তি ঘটার সম্ভাবনাও রয়েছে। আর যখন এটি হস্তান্তর হয়ে যাবে তখন এটি জনগণকে ভালোভাবেই অবগত করবেন নতুন কর্তৃপক্ষ এটা তো অবশ্যই সবাই মনে করে।
তবে সেবা যাতে কোনরুপ বিঘ্নিত না হয় সেজন্য হস্তান্তরের পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত বর্তমানে নির্বাচন কমিশন সে বিষয়টি মাথায় রেখে সাধ্যমত জনস্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় রাখছে। কারণ নির্বাচন কমিশন একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান এবং একটি সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ। জনবিরোধী কোন কাজ নির্বাচন কমিশনও করবে না এটা আমনা সবাই জানি এবং মানি।