জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন

স্থায়ী অথবা অস্থায়ী যে ঠিকানায় ভোটার সেই ঠিকানা মূদ্রিত হয় জাতীয় পরিচয়পত্রে। স্থায়ী অথবা অস্থায়ী ঠিকানার যে কোনটি বা উভয় ঠিকানাই পরিবর্তন যোগ্য। কারণ ভাড়া বাসায় থাকলে অস্থায়ী বা বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে হরহামেশাই। আবার বসতবাড়ী বিক্রি, নদী ভাঙ্গন, নতুন জায়গায় বাড়ী তৈরী কিংবা গ্রামের ভিটেমাটি বিক্রি করে অনেকেই শহরে বাড়ী বা ফ্লাট কিনে এমনকি অনেকে একাধিক জায়গায় বাড়ী করে তার স্থায়ী ঠিকানা একাধিক জায়গায়ও করে থাকে। জাতীয় পরিচয়পত্রের বা ডাটাবেজে রক্ষিত ঠিকানা পরিবর্তন করার বিষয়টি কিছুটা সেনসেটিভ হওয়ার কারণে এখনও এর জন্য অনলাইনে আবেদন করার সিস্টেম চালু হয়নি। এটি করতে সরাসরি উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে গিয়ে কাগুজে আবেদন ফরমের মাধ্যমে আবেদনটি করতে হয়। তবে আবেদন করার পর কাগজপত্র এবং ক্ষেত্র বিশেষে সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে এই পরিবর্তনটি অনুমোদন করা হয়।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের লোগো - Bangladesh Election Commission Logo Png,  Transparent Png - 1024x1024(#436849) - PngFind

পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করার প্রয়োজনীয়তা

আবাসস্থল পরিবর্তনজনিত কারণে অনেক সময় প্রয়োজন হতে পারে জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তনের। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় বিভিন্ন সেবা প্রাপ্তিতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এ কারণে পরিবর্তিত ঠিকানার বা সংশোধিত ঠিকানার জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন হতে পারে।

ঠিকানা পরিবর্তন করার আবেদন পদ্ধতি

কার্ডের গায়ের ঠিকানা পরিবর্তনঃ স্থায়ী অথবা অস্থায়ী ঠিকানার মধ্যে ভোটার এলাকার ঠিকানা মূদ্রিত হয় জাতীয় পরিচয়পত্রে গায়ে। তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এটি আস্থায়ী বা বর্তমান ঠিকানা হয়ে থাকে। তবে অল্প কিছু ক্ষেত্রে এটি স্থায়ী ঠিকানাও থাকতে পারে। তবে যাদের স্থায়ী/অস্থায়ী উভয় ঠিকানা একই তারা ডাটাবেইজের ঠিকানার অংশে দেখবেন একবার তা স্থায়ী ঠিকানার ঘরে এবং আরেকবার বর্তমান ঠিকানার ঘরে লেখা আছে। তবে ব্যক্তি কোন এলাকার ভোটার সেটি নিশ্চিত হয়ে বুঝে তারপরই আবেদন করতে হবে যে তার কোনটি পরিবর্তন বা সংশোধন প্রয়োজন। কার্ডের গায়ের ঠিকানা যেটি ভোটার ঠিকানা সেটি পরিবর্তনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা বিধিমালার আওতায় ১৩ নং ফরম (ভোটার স্থানান্তর/মাইগ্রেশন) পূরণ করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংযুক্ত করে আবেদন এর কপি জমা করতে হয়। আর যদি প্রয়োজন হয় স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তনের সেক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের যে আবেদন ফরম রয়েছে সেটিতে আবেদন করতে হবে।  এটি করতে হয় যে ঠিকানায় যেতে ইচ্ছুক সেই এলাকার উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে গিয়ে। ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে আপনার বিদ্যমান জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, আবাসিক কোন একটি ইউটিলিটি বিলের (পানি/বিদ্যুৎ/গ্যাস/টেলিফোন) কপি, পৌরকর/হোল্ডিং ট্যাক্স/চৌকিদারী ট্যাক্স পরিশোধের কপি, প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা/স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভার কাউন্সিলর বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র।

কতদিন লাগে ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য

ঠিকানা পরিবর্তনের আবেদন আবেদন সঠিক থাকলে তা জমা দেয়ার পরবর্তী মাস খানেকের মধ্যে ডাটাবেইজে আপনার ঠিকানা পরিবর্তন হয়ে যাবে। প্রাথমিকভাবে ঠিকানা পরির্বনের জন্য কোন ফি প্রদান করতে হবে না।

পরিবর্তিত ঠিকানার আইডি কার্ড পেতে করনীয়

বিদ্যমান কার্ড প্রতিস্থাপন করে পরিবর্বিত ঠিকানার এনআইডি পেতে এনআইডি অনলাইন পোর্টালে রেজিষ্ট্রেশন করে এনআইডি কার্ড রি-ইস্যু’র আবেদন করলে অথবা অনলাইনে আবেদন করতে না পালে বা সমস্যা হলে সরাসরি সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রতিস্থাপনের জন্য ফরম-৬ (হারানো/নষ্ট হওয়ার কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রতিস্থাপন ফরম) পূরণ করে আবেদন করা যাবে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান কার্ড হস্তান্তর করে সরকারী ফি প্রদান করে আবেদন জমা দিতে হবে।

কোথায় আবেদন করতে হয় পরিবর্তিত ঠিকানার আইডি কার্ড পেতে

পরিবর্বিত ঠিকানার এনআইডি পেতে এনআইডি অনলাইন পোর্টালে রেজিষ্ট্রেশন করে এনআইডি কার্ড রি-ইস্যু’র আবেদন করে ডুপ্লিকেট ইস্যু করানো যায়। তবে কেউ যদি অনলাইনে আবেদন করতে না পারে বা সমস্যা হয় তাহলে সরাসরি সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রতিস্থাপন/কার্ড রি-ইস্যু’র জন্য ফরম-৬ (হারানো/নষ্ট হওয়ার কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রতিস্থাপন ফরম) পূরণ করে আবেদন করতে পারেন।

কার্ড রিপ্লেসমেন্ট পেতে প্রয়োজনীয় সময়

স্থানীয় নির্বাচন অফিসে সাধারণ ক্যাটাগরীর আবেদন করলে ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে কার্ড পাওয়া যায়। তবে জরুরী প্রয়োজন হলে জরুরী ফি প্রদান করে আবেদন জমা দিলে সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন অফিস হতে সর্বোচ্চ ৭ দিনের মধ্যে মিলবে পরিবর্তিত ঠিকানার এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র।