এনআইডি সেবার আবেদন করার প্রক্রিয়া জানলেও অনেকেরই জানা নাই নিজেই কিভাবে অতি সহজে এনআইডি ফি জমা দেয়া যায়। ফলে অনেকেই পূর্বে প্রচলিত সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ফি জমা দিয়ে পড়েন বিপাকে। এনআইডি সার্ভিসের ফি জমা দেয়া এখন অনেক সহজ। ফি জমা দেয়ার জন্য এখন আর প্রয়োজন নেই ব্যাংকের লম্বা লাইনে দাড়ানোর বা এজেন্টদের দোকানে ভিড় করার। ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের মোবাইল পরিসেবা বহুল প্রচলিত “রকেট” মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসের মাধ্যমে এনআইডি সেবার আবেদন ফি জমা দেয়ার বিষয়টিও চালু রয়েছে।
মোবাইল ব্যাংকিং-এ বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেকটাই অভ্যস্ত। তবে টাকা পাঠানো/উত্তোলনের ক্ষেত্রে অনেকেই নির্ভর করেন এজেন্টদের উপর। ফলে অনেক সার্ভিসের পেমেন্ট নিজের মোবাইল হতে দেয়ার ব্যবস্থা থাকলেও না জানার ফলে এটির ব্যবহার না করে অনেকেই ধরনা দেন এজেন্টদের। আগে থেকে যদি মোবাইলে এ্যাপস নামানো না থাকে তাহলে গুগল-প্লে স্টোর বা আই-ক্লাউড হতে এটি ডাউনলোড করে রেজিস্ট্রেশন করা খুবই সহজ। এতে বিভিন্ন ইউটিলিটি সেবার ফি/বিল প্রদান করা যায় অত্যন্ত সহজে।
ডাচ্ বাংলা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এর অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেম হতে এনআইডি সেবার ফি জমা দেয়া যায়। এছাড়া জনপ্রিয় মোবাইল আর্থিক সেবা “রকেট”, “বিকাশ”, “টি-ক্যাশ অথবা TAP ” এবং “ওকে ওয়ালেট” মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমেও এনআইডি সেবার ফি জমা দেয়া যায়।
মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করলেও না জানার কারণে এনআইডি সেবার ফি জমা দিতে অনেকেরই দারস্থ হতে দেখা যায় এজেন্টদের দোকানে। রকেট এর মাধ্যমে এনআইডি ফি’র অপশন খুজে পান না এমন মন্তব্য করেন অনেকেই। এজন্য “রকেট” মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে কিভাবে এনআইডি ফি জমা দেয়া যায় তা দেখা যাক-
যারা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেন তারা আগে থেকে “রকেট” ব্যবহার করলে অথবা আগে থেকে রকেট ইন্টল করা না থাকলে যারা এন্ডয়েড মোবাইল ব্যবহার করের তারা গুগল প্লে স্টোর হতে আর যারা আইফোন ব্যবহার করেন তারা আইওএস এর “এ্যাপ স্টোর” হতে “রকেট” মোবাইল এ্যাপস ডাউনলোড করে নিন। এর পর আগে থেকে রেজিস্টেশন করা না থাকলে আইডি কার্ড এর তথ্য ও ছবি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিন নিজে নিজেই। এরপর রকেট এর “বিল-পে” অপশনে গেলে এর “Search Biller” অপশনে EC লিখে একটা স্পেস/সার্চ দিলেই চলে আসবে নির্বাচন কমিশনের লোগো প্রদর্শিত EC Bangladesh অপশনটি। সেখানে ঢুকলে এনআইডি নম্বর ইনপুট করার অপশনে ১০/১৭ সংখ্যার এনআইডি নম্বরটি দিতে হবে। এর নিচেই এপ্লিকেশন টাইপ অপশনে ১/২/৩/৪/৫ (যার জন্য যেটি প্রযোজ্য) দিতে হবে।
এপ্লিকেশন টাইপ অপশনে কোন প্রকার আবেদনের ক্ষেত্রে কত (১-৫) লিখতে হবে তার বর্ণনা নিচে দেয়া হলো-
এনআইডি’র তথ্য (এনআইডি কার্ডে প্রদর্শিত তথ্য) সংশোধনের প্রয়োজন হলে লিখতে হবে “১”
এখনআইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্রে প্রদর্শিত তথ্য ব্যতীত ডাটাবেইজের অন্যান্য তথ্য সংশোধনের প্রয়োজনে লিখতে হবে “২”
এনআইডি’র তথ্য এবং এনআইডি’র তথ্যের বাইরে ডাটাবেইজের অন্যান্য তথ্য একসাথে সংশোধনের আবেদন করতে লিখতে হবে “৩”
হারানো কার্ড এর ডুপ্লিকেট কপি সাধারণ সময়ে (৩০ কার্য দিবসের মধ্যে) পেতে চাইলে লিখতে হবে “৪”
হারানো কার্ড এর ডুপ্লিকেট কপি জরুরী (১০ কার্য দিবসের মধ্যে) উত্তোলনের প্রয়োজন হলে লিখতে হবে “৫”
এর পর আবেদনটি নিজের হলে “Pay for” এর পাশের Self নামক রেডিও বাটন সিলেক্ট করতে হবে আর যদি আবেদনটি হয় অন্য কারো তাহলে Other নামক রেডিও বাটন সিলেক্ট করে তার নিচে ঐ ব্যক্তির মোবাইল নম্বরটি লিখতে হবে (এতে তার নম্বরে ফি জমার ট্রানজেকশন আইডি সম্বলিত একটি মেসেজ যাবে)। এর পর “VALIDATE” অপশনে চাপ দিলে আপনার আবেদনটির জন্য কত টাকা ফি জমা দিতে হবে এনআইডি সিস্টেম হতে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদর্শন করবে। আপনি যদি ফি জমা দিতে চান তাহলে “Ok” দিতে হবে। এরপর আপনাকে আপনার ট্রানজ্যাকশন সামারী দেখাবে এবং পিন নম্বর প্রদান করার এবং ট্রানজ্যাকশনটি কনফার্ম করার জন্য অপশন দিবে। পর্যাপ্ত ব্যালেন্স থাকলে ফি জমা করার জন্য কনফার্ম করলে লেনদেন এর তথ্য এনআইডি সিস্টেমে চলে যাবে। ফি জমা সম্পন্ন হলে এ্যাপসে তা দেখাবে এবং একটি ফিরতি SMS-এ ট্রানজ্যাকশন আইডি ও ফি জমার বিবরণী চলে যাবে।
এনআইডি সিস্টেমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ফি জমা হয় বিধায় এর জন্য আলাদাভাবে কোন রশিদ/স্লিপ জমা দিতে হয় না। ফি জমা করার পর আবেদন সাবমিট করা যায়।
Comments are closed.