লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমন আর লম্বা হতে আরো লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর লাইন। ক্রমশই অস্বাভাবিকহারে বাড়তে থাকায় প্রাণঘাতি করোনার সংক্রমনরোধে বাংলাদেশে সরকার ৫ এপ্রিল, ২০২১ তারিখ সোমবার হতে এক সপ্তাহের জন্য শুরু হয়েছে লকডাউন যা বর্ধিত করে করা হয়েছে ১৪ এপ্রিল সকাল ৬ টা পর্যন্ত।
লক ডাউন অথচ সরকারী-বেসরকারী সকল অফিস চলবে, চলবে কল-কারখানা, গার্মেন্টস শিল্প, নির্মান কার্য, হোটেল-রেস্তোরা, দোকান-পাঠ সবই। এই লক ডাউন জনগণ কতটা মানবে বা সরকার কতটা কঠোরভাবে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে সেটা নিয়ে চলছে বিভিন্ন মহলে আলোচনা। এছাড়া মাত্র এক সপ্তাহ লকডাউন যথেষ্ঠ কিনা বা এর সময়সীমা গত বছরের মত আস্তে আস্তে দীর্ঘায়িত হবে কিনা রয়েছে সেই আলোচনাও।
সরকার ৫০% জনবল দিয়ে চালু রাখতে বলছে জরুরী সকল সেবা, প্রথমে গণপরিবহনে একটি করে সিট খালি রেখে যাত্রী পরিবহণ করার কথা বললেও পরবর্তীতে লকডাউনের ঘোষণায় গণপরিবহণসহ, নৌ, রেল ও আভ্যন্তরীন বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে বিদেশগামী ও আগত যাত্রীগণ এই বিধি নিষেধের আওতামূক্ত থাকলেও তাদেরকে কোয়ারান্টাইনের শর্ত মেনে চলতে হবে। এছাড়া জরুরী খাদ্য ও পন্য পরিবহনে নিয়োজিত গাড়ীসমূহ এর আওতামূক্ত রাখা হয়েছে। বিনোদন কেন্দ্র বা পর্যটন কেন্দ্র সমূহ বন্ধ থাকছে। আইনশৃঙ্খলা, ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ-পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, বন্দর সমূহের কার্যক্রম, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাক সেবা সহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ তাদের কর্মচারী ও যানবাহন নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
খাবারের হোটেল খোলা থাকবে তবে বসে খাবার গ্রহণে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা; তবে টেকআউট বা পার্শেল সার্ভিস এবং অনলাইনে অর্ডার করে খাবার ডেলিভারী করতে বাধা নেই। তবে মার্কেট বা শপিংমল সমূহ খোলার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
সরকারী/বেসরকারী অফিস বন্ধ না করে রোস্টার করে ৫০% জনবল দিয়ে চালাতে হবে জরুরী সকল সার্ভিস। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দিয়েছে যে, ব্যাংকসমূহ তার প্রয়োজনীয় জনবল দিয়ে কার্যক্রম চালাতে পারবে। এক্ষেত্রে ৫০% জনবল এর বিষয়টি তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। ব্যাংকের লেনদেন এর সময়সীমা কমিয়ে এনে ১০ টা হতে ১২.৩০ পর্যন্ত সীমীত রাখা হয়েছে।
জরুরী প্রয়োজন ছাড়া সন্ধা ৬ টা হতে সকাল ৬ টা পর্যন্ত বাসার বাইরে যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে। এমনকি সকাল ৬টা হতে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত অকারণে বাইরে যেতে বারণ করেছে। বারণ করা হয়েছে অপ্রয়োজন গল্প-আড্ডা দিতে বাইরে যেতে। বিকেল ৪ টার পর কাচাঁবাজার বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। সকল ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও মুখে মাস্ক পরে চলাচল করার জন্য সরকারী নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সরকারী আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে মর্মে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এ আদেশ প্রতিপালনে পুলিশ নজরদারী করছে।
তবে লকডাউনের ৩য় দিন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৯ টা হতে ৫ টা পর্যন্ত শপিংমল/মার্কেট এর দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে এবং অফিসগামী লোকদের দূর্ভোগ কমাতে রাজধানীর মধ্যে চলাচলকারী গণপরিবহনকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যান চলাচলের অনুমতি প্রদান করেছে। আগামী রবিবার হয়তো আরো কোন নির্দেশনা আসতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
মসজিদে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে দেয়া হয়েছে কতিপয় নির্দেশনা
১) মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে এবং আগত মুসল্লীকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে।
২) মুসুল্লিদের প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওযু করে সুন্নাত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে হবে; (ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে)।
৩) মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না; প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে, মুসল্লীগণের প্রত্যেককে নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে ।
৪) কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
৫) শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যে কোন অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামায়াতে অংশগ্রহণ করা হতে বিরত থাকবে।
৬) সংক্রমণ রোধকল্পে মসজিদের ওযুখানায় সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে; মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না
৭) সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত কল্পে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।
৮) মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা যাবে না।
৯) করোনা মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে খতিব ও ইমামগণকে দোয়া করতে বলা হয়েছে।
https://shorturl.fm/WBoTC
https://shorturl.fm/M6w3F
https://shorturl.fm/kV1Fm
ci7u63
n28ce0
zrggme
https://shorturl.fm/6W7I9
https://shorturl.fm/hBgfW
6k8uee
xhuwjf