সেকেন্ট হ্যান্ড বা পুরাতন গাড়ী কেনার পর পরই প্রয়োজন হয় গাড়ীর মালিকানা বা ওনারশীপ পরিবর্তন করার। এটি না করা পর্যন্ত যার নামে গাড়ীটি এতদিন ছিল অফিশিয়ালি সেই থাকে গাড়ীর মালিক। এজন্য গাড়ী ক্রয়ের সাথে সাথে বিক্রেতার নিকট হতে গাড়ীর সকল মূল কাগজপত্রসহ বিক্রয়ের রশিদ, টিটিও ফরম এবং ২৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বিক্রয়ের হলফনামা (ছবিসহ) স্বাক্ষর করিয়ে নিতে হবে। বর্নিত কাগজগুলো স্বাক্ষর করিয়ে নেয়ার পর পরই ক্রেতার নিজেরও ফরম টিও, ফরম টিটিও, ২৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ক্রয়ের হলফনামা (ছবিসহ), প্রয়োজনীয় ফি জমাদানের রশিদ, টিন সার্টিফিকেট, মুল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (স্মার্ট কার্ড অথবা পুরাতন সিস্টেমের গাড়ীর কপি ও হাউজ কপিসহ) ও ৩ কপি স্ট্যাম্প সাইজের ছবিসহ মালিকানা পরিবর্তনের জন্য বিআরটিএ’র সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে।
মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত মালিকানা ব্যতিত):
ক্রেতার করণীয়ঃ
১। পূরণকৃত ও স্বাক্ষরিত ‘টিও’ ও ‘টিটিও’ ফরম; [এ দু’টি ফরমসহ অন্যান্য ফরম বিআরটিএর ওয়েবসাইটের DOWNLOAD FORMS থেকে পাওয়া যাবে]
২। প্রয়োজনীয় ফি জমার রশিদ;
৩। ভাড়ায় চালিত নয় এমন কার, জিপ, মাইক্রোবাস-এর ক্ষেত্রে ক্রেতার ই-টিআইএন সনদের কপি।
৪। মূল রেজিস্ট্রেশন সনদ (উভয় কপি) অথবা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট এর কপি;
৫। ছবিসহ নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে ওয়ারিশগণের হলফনামা [একাধিক ওয়ারিশ থাকলে এবং একজনের নামে মালিকানা প্রদান করা হলে অন্যান্য ওয়ারিশগণ কর্তৃক স্ট্যাম্পে আর একটি হলফনামা দিতে হবে];
৬। সংশ্লিষ্ট নমুনা স্বাক্ষর ফরমে ক্রেতার নমুনা স্বাক্ষর এবং ইংরেজীতে নাম, পিতা/স্বামী’র নাম, পূর্ণ ঠিকানা, ৩ কপি স্ট্যাম্প সাইজের রঙ্গীন ছবিসহ সকল তথ্য পূরণকৃত ফরমের কপি , তবে ক্রেতা যদি ব্যক্তি না হয়ে কোন প্রতিষ্ঠান হয় তাহলে, উপরে বর্ণিত কাগজপত্রসহ (হলফনামা ব্যতিত) অফিসিয়াল প্যাডে গাড়ী বিক্রয়ের বিষয়টি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন (বিআরটিএ) কর্তৃপক্ষকে একটি পত্র প্রদান করে গাড়ীর মালিকানা পরিবর্তনের বিষয়টি জানাতে হবে।
বিক্রেতার করণীয়ঃ
১। ফরম ‘টিটিও’ এবং বিক্রয় রশিদে স্বাক্ষর;
২। বিক্রেতার ছবিসহ বিক্রয় হলফনামা;
৩। বিক্রেতা কোম্পানী হলে কোম্পানীর লেটার হেড প্যাডে ইন্টিমেশন, বোর্ড রেজুলেশন ও অথরাইজেশন পত্র প্রদান;
৪। মোটরযানটি ব্যাংক অথবা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের নিকট দায়বদ্ধ থাকলে দায়বদ্ধকারী প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোদ সংক্রান্ত ছাড়পত্র সংগ্রহ করে তা দাখিল করা;
ওয়ারিশ সূত্রে মালিকানা বদলীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১। পূরণকৃত ও স্বাক্ষরিত ‘টিও’ ও ‘টিটিও’ ফরম [এ দু’টি ফরমসহ অন্যান্য ফরম যা বিআরটিএ’র ওয়েবসাইটের DOWNLOAD FORMS থেকে পাওয়া যাবে];
২। কোর্ট/স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ওয়ারিশ সংক্রান্ত সনদ;
৩। প্রয়োজনীয় ফি জমা দানের রশিদ;
৪। ভাড়ায় চালিত নয় এমন কার, জিপ, মাইক্রোবাস-এর ক্ষেত্রে একাধিক ওয়ারিশ থাকলে প্রথম ওয়ারিশের ই-টিআইএন সনদের কপি।
৫। মূল রেজিস্ট্রেশন সনদের উভয় কপি (Car and house) অথবা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট এর কপি;
৬। ছবিসহ নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে ওয়ারিশসূত্রে মালিকানা প্রাপ্তি সংক্রান্ত ওয়ারিশগণের হলফনামা [একাধিক ওয়ারিশ থাকলে এবং একজনের নামে মালিকানা প্রদান করা হলে সেক্ষেত্রে অন্যান্য ওয়ারিশগণ কর্তৃক সকলের ছবিসহ নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে আরেকটি হলফনামা];
৭। নমুনা স্বাক্ষর ফর্মে নমুনা স্বাক্ষর এবং ইংরেজীতে নাম, পিতার/স্বামীর নাম, পূর্ণ ঠিকানা ও ৩ কপি স্ট্যাম্প সাইজের রঙ্গীন ছবিসহ ফরমের অন্যান্য তথ্য পূরণ;
প্রয়োজনীয় ফি
সিডান, কার, জীপ ও অন্যান্য প্রাইভেট যানবাহনের ক্ষেত্রে রেজি: ফি ৯৮০০০ টাকার তিন ভাগের একভাগ টাকা মালিকানা বদলী বাবদ ফি প্রদান করতে হবে।
মালিকানা পরিবর্তন কতটা জরুরী
ব্যবহৃত গাড়ীটি বিক্রি করে শুধু বিক্রিত টাকা পেলেই কা শেষ? না টাকা পাওয়ার থেকেও জরুরী মালিকানা পরিবর্তন করিয়ে ক্রেতার নামে হস্তান্তর করিয়ে দেয়া।
বিক্রিত গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন না করার ঝুঁকি সমূহ
গাড়ি দ্বারা সংঘঠিত কোন দুর্ঘটনা/অবৈধ ব্যবহারের ফলে গাড়ীর নামে মামলা হলে তা বর্তাবে বিদ্যমান মালিকের ঘাড়ে। কারণ অফিশিয়ালি এখনও মালিক আপনিই আছেন। তাই বিক্রিত টাকা পাঔযার পাশাপাশি ঐ গাড়ীর মালিক হিসেবে কাটিয়ে নিন নিজের নামটি।
এছাড়া আপনার যদি থাকে আরো কোন গাড়ী তাহলে সেই গাড়ীর কোন ফি জমা দিতে গেলে দেখবেন আপনাকে আরো ৫০% আতিরিক্ত অগ্রীম আয়কর গুনতে হচ্ছে একাধিক গাড়ী থাকার করণে।
Comments are closed.