আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিং

আউটসোর্সিং বিষয়ক সাধারণ ধারণা:

আউটসোর্সিং বর্তমানে ব্যাপক প্রচলিত এবং পরিচিত একটি শব্দ । তবে অনেকেরই এ সম্পর্কে ধারনা তেমন স্পষ্ট নয়। সাধারণ অর্থে, কোন কাজ করার জন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব এবং স্থায়ী জনবল ছারা কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে চুক্তি ভিত্তিক কাজ করানো হলো আউটসোর্সিং। এক্ষেত্রে কারো চাহিদা মাফিক কোন প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাজ করা হতে পারে। আবার আউটসোর্সিং কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তার বাসা বা অফিস হতে কাজটি করে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে কাজটি জমা করে দেওয়াও বোঝাতে পারে।

নির্দিষ্ট একটি কাজ এর চুক্তি করে বা ঘন্টা প্রতি বেতন হিসেবে দু’ভাবেই আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কাজ করা যায়। যেমন, এখন অনেক সরকারী প্রতিষ্ঠান কোন কোন পদে স্থায়ী নিয়োগ দিতে চাচ্ছে না বা পারছে না। তার কারন, জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় ঐ পদের মঞ্জুরী দিয়েছেন আউট সোর্সিং হিসেবে। এজন্য প্রতিষ্ঠানটি যখন সার্কুলার দেয় তখন সরাসরি ব্যক্তির নিকট হতে দরখাস্ত আহবান করে না। জনবল সরবরাহের কাজ করে এ রকম একটি প্রতিষ্ঠান বাছা্ই করার জন্য তারা দরপত্র আহবান করে। দরপত্রের মাধ্যমে বাছাইকৃত প্রতিষ্ঠানটি নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের চাহিদা এবং ক্রাইটেরিয়া মোতাবেক জনবল সরবরাহ করে।

কেন আউট সোর্সিং:

আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নেয়ার অন্যতম কারণ হলো স্থায়ী জনবল নিয়োগ না করে যতদিন প্রয়োজন ততদিন তাদেরকে দিয়ে কাজ করানো যায়। প্রয়োজন না হলে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে নিয়োজিতদের অব্যহতি দেয়া যায়। এছাড়া আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে নিয়োজিত জনবলকে কোন পেনশন সুবিধা প্রদান করতে হয় না। ফলে সরকারের পেনশন এর একটি বিশাল বড় চাপ কমে যায়। আবার আরেকটি সুবিধা হলো যে, প্রয়োজন না হলেও স্থায়ী জনবল ছাটাই করা যায় ন; কিন্তু আউটসোর্স জনবল যে কোন সময় চুক্তি বাতিল করে অথবা চুক্তি নবায়ন না করে ছাটাই করা যায়।

বর্তমান সময়ে আউটসোর্সিং বলতে যা বেশী প্রচলিত:

বর্তমান সময়ে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে আউস সোর্সিং বলতে ইন্টারনেট ভিত্তিক কাজকে বুঝানো হয়ে থাকে। চাকরিদাতা এবং গ্রহীতার একটি প্লাটফর্মের মাধ্যমে (মার্কেটপ্লেস) দেশ বা বিদেশ যে কোন জায়গা হতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ এর জন্য আবেদন বা বিড করাকে বুঝানো হয়ে থাকে। কাজের মূল্য এবং অভিজ্ঞতা অনুযায়ী লোক নিয়োগ এবং কর্ম সম্পাদনের পর তার পারিশ্রমিক বা বিল প্রদান করা হয়ে থাকে। উন্নত দেশে স্থায়ী লোক নিয়োগ করে কাজ করানো অনেক ব্যয় সাপেক্ষ। তাই তারা একই কাজ কম খরছে করতে পারে এমন আউটসোর্সার নিয়োগ করে কাজ করে থাকে। কোন কোন দেশে যে কাজটি করাতে ঐ দেশে লোক নিয়োগ করে ঘন্টা প্রতি বেতন দিতে হবে ৩০ ডলার, সেখানে আমাদের দেশের কোন ফ্রিল্যান্সার ঘন্টা প্রতি মাত্র ৩ ডলারে রাজি হয়ে যায়। যে কারণে বায়াররা কম খরছে কাজ করাতে পারে এবং আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সাররা বেশী বেশী কাজ পেয়ে থাকে।

ফ্রিল্যান্সিং এবং ফ্রিল্যান্সার

সাধারণ অর্থে ফ্রিল্যান্সিং:

কোন প্রতিষ্ঠানে স্থায়ীভাবে চাকরী না করে যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী সার্ভিস প্রদান করার নামই ফ্রিল্যান্সিং। মিস্টার মাহফুজুল হক একজন ফ্রিল্যানন্সার। মিস্টার হক আগে একটি প্রতিষ্ঠানে ট্রেইনার হিসেবে চাকরী করতেন। এতে তিনি যতই প্রশিক্ষন দিতেন না কেন তার মাসিক বেতন ছিল নির্ধারিত। এছাড়া তাকে নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে যেতে এবং আসতে হতো।একসময় মিস্টার হক ভাবলেন আমি আর কোন প্রতিষ্ঠানে স্থায়ীভাবে চাকরী করবো না।তবে আমি এই ট্রেইটিং এর মাধ্যমেই অর্থ উপার্জন করবো এবং ধরা-বাধা কোন সময়ে কাজ না করে আমার ইচ্ছানুযায়ী করবো। তখন মিস্টার হক তার প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দিলেন আগামী মাস হতে আমি আর স্থায়ীভাবে চাকরী করবো না। তিনি জানালেন আপনারা চান আমি ট্রেইনিং করাবো, সেক্ষেত্রে আমি ঘন্টা হিসেবে পারিশ্রমিক নেব। তবে আমার যদি অন্য কোন সমস্যা এবং অন্য সিডিউল না থাকে তাহলে আমি নির্ধারিত দিন এবং সময়ের জন্য প্রশিক্ষন ক্লাস নিতে পারবো।

এভাবে মিস্টার হক বিভিন্ন ট্রেইনিং প্রতিষ্ঠানকে তার CV/প্রোফাইল পাঠিয়ে রাখলো। যাদের ট্রেইনিং এর জন্য মি. হক এর মত ট্রেইনার প্রয়োজন তারা তাকে আগে থেকে নির্ধারিত সময়ের জন্য বুক দিয়ে রাখে। সে অনুযায়ী মিস্টার হক তার সময় এবং সুবিধামত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। এখন আর সে কারো প্রতিষ্ঠানে স্থায়ীভাবে চাকরী না করে নিজের সময়ানুযায়ী একই কাজ করে থাকে। মিস্টার হক এখন ইচ্ছামাফিক একই কাজ করে কিন্তু আরো কম সময় ব্যয় করে বেশী অর্থ আয় করে থাকে। এটা হলো ফ্রিল্যান্সিং।

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং বলতে যা বেশী প্রচলিত

ফ্রিল্যান্সিং এবং ফ্রিল্যান্স বর্তমানে একটি জনপ্রিয় ধারনা। নিজ ঘরে বসে নিজের যোগ্যতা ও ইচ্ছানুযায়ী স্বাধীনভাবে দেশ বা বিদেশে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে কাজ করে অর্থ উপার্জন বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং নামে পরিচিত। কোন প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী চাকরী না করে তার দক্ষতা অনুযায়ী এবং চাহিত পারিশ্রমিক অনুয়ায়ী ইচ্ছামাফিক বা স্বাধীনভাবে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে নির্দিষ্ট কোন কাজ করা হলো ফ্রিল্যান্সিং। আর যে বা যারা এই কাজটি করে দিয়ে থাকে তারাই ফ্রিল্যান্সার নামে পরিচিত। এতে সাধারনত উন্নত দেশসমূহে যেখানে কাজের পারিশ্রমিক বেশী, সে খানে তারা কম পারিশ্রমিক দিয়ে একই কাজ অন্য দেশের ফ্রিল্যান্সারদেরকে দিয়ে করিয়ে থাকে। এতে দুয়েরই লাভ, কারণ উন্নত দেশে কম পারিশ্রমিকে কেউ কাজ করতে রাজি হয় না । আমাদের মত দেশে মাথাপিচু আয় অনেক কম এবং শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতা অনেক বেশী। ফলে উন্নত দেশের তুলনায় অনেক কম টাকায় কাজ করতে আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সাররা রাজি হয় এতে দেশের প্রচলিত শ্রমবাজারের চেয়ে বেশী রেটে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আয় করা সম্ভব হচ্ছে।

অন লাইন ভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং এর মার্কেটপ্লেস

fiverr, upwork, freelancer, elancer, odesk, get a coder, rent a coder এরকম আরো অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে। এর মধ্যে fiverr এবং upwork বর্তমানে সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস হিসেবে পরিচিত। এসব মার্কেটপ্লেসে রেজিস্ট্রেশন করে প্রোফাইল তৈরী করে বিভিন্ন কাজের জন্য বিড করতে হয়। ওয়েবসাইট ডেভেলপ এন্ড ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, সার্স ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO), ভিডিও এডিটিং, অডিও এডিটিং, গ্রাফিকস ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রিসহ বিভিন্ন কাজ জানা থাকলে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কাজ পাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশের বহু ছেলে-মেয়ে বর্তমানে এরকম কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মূদ্রা আয় করছে। কাজ শেষে নিজের অনলাইন ব্যাংক একাউন্ট হতেই উপার্জিত অর্থ দেশ হতে গ্রহণ করা সম্ভব। বিদেশী বায়ারদের কাজের প্রেক্ষিতে যে পারিশ্রমিক পাওয়া যায় তা ডলারে পরিশোধিত হয়ে থাকে বলে আমাদের দেশের জন্য এটা বেশ বড় এমাউন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়।

ফ্রিল্যান্সার হতে যা প্রয়োজন:

প্রথমত ইন্টারনেট ভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে হতে হলে কোন একটি কাজে দক্ষ হতে হবে। কোন একটি মার্কেটপ্লেসে একটি একাউন্ট ও প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। কাজের একটি পোর্টফোলিও তৈরী করে কাজের জন্য বিট করতে হবে। এজন্য ইন্টারনেট সংযোগসহ একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ প্রয়োজন হবে।

25 Replies to “আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিং”

  1. You actually make it seem so easy along with your presentation however I to find this matter to be actually
    something that I feel I’d never understand. It sort
    of feels too complex and extremely wide for me.
    I’m taking a look forward in your next post, I’ll try to get the grasp of it!
    0mniartist asmr

  2. Heya just wanted to give you a brief heads up and let you know a few of the pictures aren’t loading correctly.
    I’m not sure why but I think its a linking issue. I’ve tried it in two different internet browsers and both show the same outcome.
    0mniartist asmr

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *