এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র সর্বজন গ্রহণযোগ্য এবং অনন্য দলিল হয়ে উঠার নেপথ্যে

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের লোগো - Bangladesh Election Commission Logo Png, Transparent Png - 1024x1024(#436849) - PngFind২০০৭ সালে যখন জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান কার্যক্রমের শুরুতে কেউ ভাবেনি এই এনআইডি কার্ড একদিন এত গুরুত্বপূর্ণ দলিলে পরিনত হতে পারে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তায় নির্বাচন কমিশন যখন জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী কার্যক্রম শুরু করে তখন এটি ছিল ভোটার তালিকার একটি বাই-প্রোডাক্ট। কোন আইনি ভিত্তিই ছিলনা শুরুতে এই জাতীয় পরিচয়পত্রের। পরবর্তীতে এটিকে ভূতাপেক্ষিকভাবে আইনি কাঠামোতে আনা হয়।

এখনও জাতীয় পরিচয়পত্র যাতে কোন সার্ভিসের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক না করা হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশনের একটি সার্কুলার রয়েছে, অথচ সকল ক্ষেত্রে সকল কাজে বাধ্যতামূলক ভাবে চাওয়া হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কপি। আবার জন্ম নিবন্ধন সনদকে বাধ্যতামূলক দলিলরুপে ব্যবহারের কখা বলা থাকলেও তেমন কেউ আমলে নিচ্ছেনা।

এত অল্প দিনে জাতীয় পরিচয়পত্র এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠার নেপথ্যে রয়েছে নিবন্ধন এবং সংশোধনের উভয় ক্ষেত্রে শক্ত যাচাই-বাছাই এবং কর্তৃপক্ষের অলিখিত কঠোর নিয়মের বেড়াজাল। এছাড়া এর সবচেয়ে শক্তিশালী বিষয় হলো নিবন্ধিত সকল নাগরিকের বায়োমেট্রিক ডাটা সংরক্ষন।

বায়োমেট্রিক থাকার কারনে মুখে অস্বীকার করলেও যাত্রিকভাবে ধরা পড়ে ডুপ্লিকেট বা একাধিক নিবন্ধন। এছাড়া শক্তিশালী এবং আধুনিক সিস্টেম ব্যবহার করার কারনে নাগরিকগণের সকল তথ্য এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংযুক্ত করে রাখা হয় প্রতিটি আবেদনের সাথে। এজন্য পরবর্তীতে অন্য কোন আবেদন করলে সহজেই বেরিয়ে আসে অতীত ইতিহাস, ফলে ফাকি দেয়ার সুযোগ থাকে না মেটেই।

এ কারণে ব্যাংক-বীমা, পেনশান, পাসপোর্ট-ভিসা, আয়কর, গাড়ী-বাড়ী ক্রয়-বিক্রয়, ভূমি রেজিস্ট্রেশন, বিবাহ-তালাক, চাকরি, পেনশনসহ সরকারী-বেসরকারী যে কোন সেবা গ্রহনে প্রয়োজন হয় এই জাতীয় পরিচয়পত্র। যদিও সংশোধনের ক্ষেত্রে জটিরভাবে যাচাই-বাছাই করার কারণে অনেকে এটাকে হয়রানির কথা বলে। কিন্ত জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ বলছে যদি যেনতেনভাবে এই সংশোধনের অনুমোদন দেয়া হতো তবে এটি আজ আর সর্বজন গ্রহনযোগ্যতা পেতনা। তাই যে কোন মূল্যে এই জাতীয় সম্পদকে রক্ষা করতে হবে।

শতাধিক প্রতিষ্ঠান জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন ডাটাবেজ ব্যবহার করে অনলাইনে নাগরিক ভেরিফিকেশন করে তাদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করে থাকে। এজন্য জাল জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অনিয়ম রোধ করে দ্রুততম সময়ে সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে। তবে জনবল সংকটের কারণে অনেক ক্ষেত্রে সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করতে কিছুটা দেরী হয়ে থাকে। তবে সমস্যা নিরসন করে সংশোধনের আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।